কিভাবে পেটের চর্বি কমানো যায়
কিভাবে পেটের চর্বি কমানো যায় পেটের চর্বি বাড়ার পিছনে থাকে একাধিক কারণ তার মধ্যেই অন্যতম কারণ হলো হরমোনের সমস্যা এবং মদ্যপান। পেট ফুলে যাওয়ার অর্থ হলো লিভার সহ পেটের প্রধান অঙ্গগুলিতে অতিরিক্ত চর্বি জমে যাওয়া।পেটের অতিরিক্ত মেয়াদ বা ভুড়ি অনেকের জন্য একটি অস্বস্তিকার বিষয় ছোট ছোট অস্বাস্থ্যকর অভ্যাসের কারণে আমাদের পেটে মেদ জমে।
পেট ছাড়াও শরীরের অন্যান্য স্থানের অন্যতম কারণ এই অভ্যাসগুলি। পেটের মেদ/চর্বি দ্রুত কমাতে সাহায্য করবে এমন ১০ অভ্যাস নিয়ে এই আজকের আর্টিকেলটি লেখা হয়েছে। এই অস্বস্তিকার অভ্যাসগুলো এড়ানো গেলে শুধুমাত্র পেটের নয় বরং সর্বশরীরের মেদ কমানো সম্ভব।
পেজসূচিপত্রঃ কিভাবে পেটের চর্বি কমানো যায় .
ভূমিকা
পেটের চর্বি শুধু দেখতে অস্বস্তিকর নয় এটি স্বাস্থ্যের জন্যও ক্ষতিকর এটি হৃদরোগ ডায়াবেটিস উচ্চ রক্তচাপ এবং ক্যান্সারের মতো গুরুতর রোগের ঝুঁকি বাড়ায়। তাই কিভাবে পেটের চর্বি কমানো যায় এই বিষয়ের উপর পোস্টি লেখা হয়েছে । প্রিয় পাঠক পেটের /শরীরের মেদ কমানো সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত পড়ুন।
দ্রুত খাওয়ার অভ্যাস বাদ দিন
কিভাবে পেটের চর্বি কমানো যায় খাবার খাওয়া শুরু করার পর যখন সেই খাবার পেটে
যায় তখন পাকস্থলী থেকে মস্তিষ্কে সংকেত পৌঁছায়। সহজ ভাষায় পেটের সাথে ব্রেইনের
কথাবার্তা হয়। পেট ভরেছে কি ভরেনি তা ব্রেনে বুঝতে ব্রেইনের ১৫/২০ মিনিট পর্যন্ত
সময় লাগতে পারে। দ্রুত খাবার খেলে অতিরিক্ত খেয়ে ফেলার সম্ভাবনা থাকে কারণ পেট
ভরে যাওয়ার খবরটি পাকস্থলী থেকে হয়তো অত দ্রুত ব্রেইনে নাও পৌঁছাতে পারে।
পেটের মেদ কমাতে পারে করণীয় অতিরিক্ত না খেয়ে ফেলার জন্য ধীরে ধীরে খাবার খাওয়া এবং খাওয়ার সময় খাবারের প্রতি পূর্ণ মনোযোগ দিতে হবে। এই প্রক্রিয়াকে টিসব সময় মনে রাখতে হবে। মনোযোগ সহকারে না খাওয়ার ফলে অতিরিক্ত ক্যালোরি খেয়ে ফেলা এড়ানো সম্ভব না। তবে কোন কারনে যদি খুব দ্রুত খেতেই হয় তাহলে নির্দিষ্ট পরিমাণ খাবার প্লেট নিয়ে সেটুকুই খেয়ে শেষ করুন এতে বাড়তি খাবার খাওয়া সম্ভাবনা থাকবে না।
বয়স বাড়ার সাথে সাথে যাদের মাংশ পেশী কমে যায় তাদের শরীরে আরো চর্বি বাড়ে এটি ঘটে কারণ ইস্ট্রোজেন হরমোন হ্রাস পায় যা তাদের পেটের ভিতর চর্বি তৈরি করে। বেশিরভাগ সময় মহিলাদের কমরের চারপাশে অতিরিক্ত চর্বি থাকে কারণ তারা যথেষ্ট চলাফেরার মধ্যে থাকে না এই সমস্যা দিন দিন বাড়ছে এবং এর থেকে হতে পারে জীবন ঘাঁটি রোগ যেমন ডায়াবেটিস হৃদরোগ তাই এখন থেকে এই সমস্যা সমাধানের পথ বার করতে হবে।
স্বাস্থ্যকর খাবার
পেটের চর্বি কমানোর জন্য খাবারের প্রতিগুরুত্ব অপরিসীমা সঠিক পুষ্টিকর খাদ্য অভ্যাসে গড়ে তুলুন। প্রোটিনের গুরুত্ব প্রতিদিনের খাবারে প্রোটিন যুক্ত করুন এটি মেটাবলিজম বাড়ায়। এবং দীর্ঘক্ষণ পেট ভরিয়ে রাখে মাছ ডিম মুরগির মাংশ বাদাম ডাল ইত্যাদি প্রোটি সমৃদ্ধ খাবার খান। শর্করা কমিয়ে দিন অতিরিক্ত শর্করা চর্বি হিসেবে জমে যায় চিনি যুক্ত খাবার ও অ্যালকোহল যুক্ত পানীয় কম খাওয়ার চেষ্টা করুন।
ফাইবার যুক্ত খাবার হজম প্রক্রিয়া ধীর করে যা আপনাকে দীর্ঘক্ষন তৃপ্তি রাখে। অলিভ অয়েল অ্যাভোকাডো এবং বাদাম এক্ষেত্রে ভালো প্রক্রিয়াজাত খাবার এড়িয়ে চলুন চিপস ফাস্টফুড এবং প্যাকেটজাত খাবার এড়িয়ে চলুন।
নিয়মিত তিন বেলা খাবার খান
অনেকে সকালের নাস্তা বাদ দিয়ে একেবারে দুপুরের খাবার খাওয়ার পরিকল্পনা করেন এক বেলা খাবার বাদ দিলে অপর বেলায় বেশি খাবার খাওয়া বা অস্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়ার প্রবণতা বেড়ে যেতে পারে। এর কারণে পেটের মেদ বাড়ার সম্ভাবনা থাকে।
পেটের মেদ কমাতে করণীয় আপনার যদি কোন বেলার খাবার বাদ দেয়ার অভ্যাস থাকে তাহলে এখন থেকেই তা বদলে ফেলার চেষ্টা করুন। কোনো বেলার খাবার বাদ দিবেন না যদি কোন কারণে খাবার বাদ পড়ে যায় তাহলে পরের কোন বেলায় যেন অতিরিক্ত অস্বাস্থ্যকর খাবার না খাওয়া হয় সেই ব্যাপারে সচেতন থাকতে হবে।
আরো পড়ুনঃ
কিসমিস ভিজিয়ে খাওয়ার উপকারীতা
কিছু মানুষ মনে করে যে সকালের জলখাবার না খাওয়া এবং পরিবর্তে একটি বড় লাঞ্চ করা ঠিক আছে। কিন্তু যখন আমরা একটি খাবার বাদ দেই তখন আমাদের অস্বাস্থ্যকর খাবার প্রবণতা বেড়ে যায়। এর ফলে আমাদের পেটে মেদ বাড়তে পারে। অতএব কোন খাবার বাদ না দেওয়ায় ভালো কিন্তু আমরা যদি তা করি তাহলে আমাদের সতর্ক থাকা উচিত যাতে বেশি না খাওয়া বা অস্বাস্থ্যকর খাবার গুলো না খাওয়া।
পেটে মেদ হওয়ার কয়েকটি কারণ
পেটের মেদ বিভিন্ন কারণে হতে পারে। মেয়ের বয়স যখন বয়সন্ধির মধ্য দিয়ে যায়
তাদের শরীরে হরমোন পরিবর্তন হয় এই পরিবর্তন গুলির মধ্যে একটি হল ইস্ট্রোজেন নামক
হরমোনের কাজ যা তাদের পেট এবং নিতম্বকে বড় করে তুলতে পারে।
কখনো কখনো মেয়েরাও পেটের চর্বি বংশগত হতে পারে যদি তাদের পরিবারের কারো ওজন বেশি হয়। তবে তাদের অতিরিক্ত ওজন হওয়ার সম্ভাবনা বেশি হতে পারে। চর্বিযুক্ত বা চিনিযুক্ত খাবারের মতো অস্বাস্থ্যকর খাবার খেলে পেটের চর্বি বাড়তে পারে।
মানসিক চাপও মেয়েদের শরীরের একটি বিশেষ কারণ এটি তাদের পেটে চর্বি তৈরি করতে পারে আপনার শরীরের প্রয়োজনের চেয়ে বেশি ক্যালরি খাওয়া আপনার ওজন বাড়তে এবং পেটে চর্বি পেতে পারে। অবশেষে আমাদের বয়স বাড়ার সাথে সাথে আমাদের শরীরের সহজে খাবার হজম করে না এবং এটি আমাদের ওজন বাড়াতে পারে এবং পেটের চর্বি ও বাড়াতে পারে।কিভাবে পেটের চর্বি কমানো যায় একটি স্বাস্থ্যকর জীবন যাপনের অর্থ হল সক্রিয় থাকা। এবং নিয়মিত ব্যায়াম করা এটি আমাদের শরীরে আমরা যে খাবার খায় তা ভেঙ্গে ফেলতে সাহায্য করে। যদি আমাদের শরীর সঠিকভাবে খাবার না ভেঙে দেই তাহলে তা আমাদের পেটের চর্বিতে পরিণত হয়। যেমন (ক্যালরি বা চিনি) যখন পর্যাপ্ত ঘুম পায় না তখন তাদের শরীর অতিরিক্ত চর্বি জমা করতে পারে।
নিয়মিত ব্যায়াম করুন
নিয়মিত ব্যায়াম পেটের চর্বি কমানোর অন্যতম কার্যকর উপায় সঠিক ব্যায়াম নির্বাচন এবং তা নিয়মিত করা প্রয়োজনে দৌড়ানো হাটাঁ সাইক্লিন এবং সাঁতার কাটার মত কার্ডিও ব্যায়াম ক্যালোরি কমাতে সাহায্য করে।
ছোট সময়ে উচ্চতার কার্যক্ষমতার ব্যায়াম দ্রুত চর্বি কমাতে সাহায্য করে প্লাঙ্ক সিট আপ এবং রাশিয়ান টুইস্ট পেটের মাংস পেশি শক্তিশালী করতে সহায়ক ভারী ব্যায়াম বা ওজন ওলা কিছু যন্ত্র দুই হাতে সমান ভাবে উঠা নামা করলে শরীরের মেটাবলিজম বাড়ে এবং চর্বি দ্রুত কমে যায়।
খাবারের সময় বড় প্লেটের বদলে ছোট প্লেট বেছে নিন
এক্ষেত্রে মূল বিষয় প্লেটের আকার ছোট বড় নয় বরং কতটুকু খাবার শরীরে যাচ্ছে সেটি সাধারণত প্লেটের আকার বড় হলে প্লেটে বেশি খাবার আটানো যায় ফলে অসচেতন মনেও সাধারণত খাওয়া একটু বেশি পরিমাণ নেয়া হয়। বেশিরভাগ মানুষেরই মাঝেই সাধারণত প্লেটে যতটুকু খাবার নেওয়া হয় তা পুরোটাই শেষ করতে হয়।
কিভাবে পেটের চর্বি কমানো যায় কিছু খাবার বাকি থাকা অবস্থায় পেট ভরা মনে হলেও প্লেটের খাবার রেখে উঠে যাওয়া হয় না এভাবে প্রয়োজনের অতিরিক্ত খাওয়া হয়ে যায় সেজন্যই ওজন বাড়তে থাকে এবং শরীরের মেদ/চর্বি জমে যায়।অতিরিক্ত না খাওয়ায় ছোট প্লেটে খাবার নিন খাবার প্লেটে নেওয়ার সময় পরিমাণের দিকে খেয়াল রাখবেন এতে খাবার নষ্ট হওয়ার এবং প্রয়োজনের চেয়ে অতিরিক্ত খাবার খাওয়ার সম্ভাবনা কমবে
শরীর চর্চায় মন দেন
কিভাবে পেটের চর্বি কমানো যায় আপনি যখন শুয়ে বসে থাকেন তাহলে আপনার শরীরে
অতিরিক্ত চর্বি জমা হতে পারে। কিন্তু আপনি যদি সপ্তাহে ৫ দিন মাত্র ৩০ মিনিটের
জন্য দ্রুত হাঁটেন তাহলে আপনি এটি ঘটতে বাধা দিতে পারেন। প্রতি সপ্তাহে মাত্র
আড়াই ঘন্টা ব্যায়াম আপনাকে সুস্থ থাকতে সাহায্য করতে পারে এবং আপনার শরীরের
চর্বি কম রাখতে পারে।
আপনি শুধুমাত্র এক রাতে চর্বি পরিত্রান পেতে আশা করতে পারেন না হাটঁতে থাকুন এবং এটি আরো ভালো যদি আপনি কিছু ওজন ওলা কিছু যন্ত্র দুই হাতে সমান ভাবে উঠা নামা এবং শক্তিশালী করতে অন্যান্য ব্যায়াম যোগ করতে পারেন। এছাড়াও আপনি আপনার পছন্দের অন্য কোন ধরনের ব্যায়াম বেছে দিতে পারেন আপনি বাড়িতে চর্বি কমানোর ব্যায়াম করতে পারেন।
খাবারের লেভেল পড়তে শিখুন
কোম্পানির কিছু খাবার খাওয়ার আগে তার লেভেলগুলি পড়া খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটা বিষয় তার কারণ যখন তখন আমরা অস্বাস্থ্যকর চর্বি রয়েছে এমন খাবার বেশি পরিমাণে খেতে পারি ফুড লেভেল চিনির উপাদানের একাধিক স্বাস্থ্যকর নাম থাকে যেমন ডেট সুগার মড সিরাপ মেকল সিরাপ মধু গুড় ইত্যাদি।
জটিল বা বিকল্প নামগুলির পাশাপাশি অস্বাস্থ্যকর উপাদানের পরিমাণ বোঝাটাও গুরুত্বপূর্ণ যদি লেভেলে প্রস্তাবিত সীমার চেয়ে বেশি পরিমাণে পরিষদিত শস্য প্রক্রিয়াজাত জেনে বা প্রসেসর্ড সুগার সোডিয়াম বা হাইড্রোজেনের তেল উল্লেখ করা হয় তাহলে আপনার দৈনন্দিন খাদ্য তালিকা করার পরামর্শ দেওয়া হয়।
শুয়ে শুয়ে বসে না থেকে একটিভ হন
শুয়ে বসে থাকলে যে শরীরে চর্বি জমে তা প্রায় সবারই জানা এর খুবই সহজ সমাধান হলো সপ্তাহে পাঁচ দিন মাত্র ৩০ মিনিট করে দ্রুত হাঁটা শুরু করুন। সারা সপ্তাহে মাত্র আড়াই ঘণ্টা ব্যায়াম করেই আপনি অনেক উপকার পাবেন এতে রোগ ব্যাধির সম্ভাবনা কমবে শরীরের চর্বির পরিমাণ কমবে।
আরো পড়ুনঃ
আখের রস খাওয়ার উপকারিতা
কিভাবে পেটের চর্বি কমানো যায় রাতারাতি চর্বি কমানোর আশা করবেন না হাটা চালিয়ে যাবেন সাথে ওজন ওলা কিছু যন্ত্র দুই হাতে সমান ভাবে উঠা নামা করতে পারলে আরো ভালো হয়। অন্য কোন ব্যায়াম আপনার জন্য উপযুক্ত হলে সেটিও করতে পারেন অনেকদিন ধরে কোন শারীরিক পরিশ্রম করেননি এমন ব্যক্তিও প্রতি দিন ৫ কিলোমিটার করে দৌড়ানো শুরু করতে পারেন।
অস্বাস্থ্যকর ঘুমের রুটিন বদলে ফেলুন
কিছু গবেষণায় দেখা গেছে যে পর্যাপ্ত ঘুমের অভাবের সাথে ওজন বেড়ে যাওয়ার একটি সম্পর্ক রয়েছে। এর পিছনে বিভিন্ন কারণ রয়েছে রাত জাগলে কিছু একটা খেতে ইচ্ছে করতে পারে এভাবে খাওয়া অতিরিক্ত খাবার ক্যালরি শরীরে মেদ হিসেবে জমা হয় ঘুমিয়ে থাকলে সেই অতিরিক্ত ক্যালরি খাওয়া হত না।
রাত জেগে কাজ করার সময় খাবার হিসেবে সাধারণত ক্ষতিকর ফ্যাট বা চিনি যুক্ত খাবার অথবা অতিরিক্ত বাজার জাত খাবার বেছে নেওয়া হয়। খাবারটি স্বাস্থ্যকর কিনা তা নিয়ে তখন সাধারণত চিন্তা করা হয় না।শেষ কথা
প্রিয় পাঠক আমরা আশা করব এই আর্টিকেলের মাধ্যমে আপনি কিভাবে পেটের চর্বি কমানো
যায় সে সম্পর্কে জানতে পেরেছেন আমাদের এই আর্টিকেলটি পড়ে আপনার যদি ভালো লাগে
যদি উপকৃত হন অবশ্যই বন্ধুদের সাথে শেয়ার করবেন নিয়মিত এই ধরনের তথ্য পেতে
আমাদের ওয়েবসাইটটি ভিজিট করুন।
এতক্ষণ আমাদের সঙ্গে থাকার জন্য ধন্যবাদ দেখা হবে পরবর্তী কোনো আর্টিকেলে সে পর্যন্ত ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন (আল্লাহ হাফেজ)
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url