সিজারের পর ঘাড় ব্যথা হলে করণীয়
সিজারের পর ঘাড় ব্যথা হলে করণীয় সিজার একটি সাধারণত অস্ত্রোপচার পদ্ধতি যা অনেক নারীর ক্ষেত্রে শিশুর জন্মদানের জন্য প্রয়োজন হয়। যদিও এটি মা ও শিশুর জীবন রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। সিজারের পর বিভিন্ন শারীরিক জটিলতা দেখা দিতে পারে এর মধ্যে কোমরের ব্যথা অন্যতম।
পেজসূচিপত্রঃ সিজারের পর ঘাড় ব্যথা হলে করণীয় .
সিজারের পর ঘাড় ব্যথা হলে করণীয়
অস্ত্রোপচারের পর প্রতিক্রিয়া: সিজার সেকশন একটি বড় অস্ত্রপচার। এর সময় কোমরের কাছে এনেস্থেশিয়া স্পাইনাল বা এপিডিউরাল প্রয়োগ করা হয়। এনার্জেটিক্সের প্রভাব অনেক সময় কোমরের পেশিতে চাপ সৃষ্টি করতে করে যা ব্যথার কারণ হতে পারে।
অস্ত্রোপচারের জখম: সিজারের সময় পেটের পেশি কাটা হয়। ফলে পিঠ এবং কোমরের পেশির উপর বাড়তি চাপ পরে। পেটের পেশি দুর্বল থাকলে কোমরের পেশি অতিরিক্ত কাজ করতে হয় যা ব্যথা বাড়ায়।
শরীর ভঙ্গি: সন্তান জন্মানোর পর মায়েরা সাধারণত শিশুকে কোলে নিয়ে দীর্ঘ সময় কাটান। বিশেষ করে খাওয়ানোর সময় ভুল ভঙ্গিতে বসা বা দাঁড়ানো কোমরের ব্যথার প্রধান কারণ হতে পারে।
ওজন বৃদ্ধি: গর্ভাবস্থার সময় শরীরে ওজন বৃদ্ধি পায়। এই অতিরিক্ত ওজন পিঠ এবং
কোমরের উপর চাপ সৃষ্টি করে সিজারের পরে এ চাপ কোমলেও ব্যথা থেকে যেতে পারে।
হরমোনাল পরিবর্তন: গর্ভাবস্থার সময় এবং সন্তানের জন্মের পর শরীরে প্রজেস্টেরন ও
রিলাক্সিন হরমোনের মাত্রা বাড়ে। এগুলি পেশি ও লিগামেন্ট শিথিল করে যা ব্যথার
কারণ হতে পারে।
কোমরের ব্যথার প্রতিকার
বিশ্রাম: সিজারের পর প্রাথমিকভাবে পর্যাপ্ত বিশ্রাম দেওয়া জরুরি। এটি শরীরকে
সারাতে এবং কোমরের ব্যথা কমাতে সাহায্য করে।
ব্যায়াম: ডাক্তার বা ফিজিওয়েথেরাপিস্টের পরামর্শ নিয়ে হালকা স্ট্রেচিং এবং ব্যায়াম শুরু করতে পারেন। বিশেষ করে স্ট্রেন্থ বাড়ানোর জন্য ব্যায়ামও পিলেটস কার্যকারী।
সঠিক ভঙ্গি: বজায় রাখা সন্তানকে দুধ খাওয়ানোর সময় বা কোলে নেওয়ার সময় সঠিক
ভঙ্গি বজায় রাখা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। মেরুদন্ড সোজা রেখে বসার অভ্যাস করলে ব্যথা
কমে।
হট বা কোল্ড কম্প্রেস: ব্যথা হলে হট বা কোল্ড কমপ্রেস লাগানো যেতে পারে। এটি রক্ত সঞ্চালন বাড়িয়ে ব্যথা কমাতে সাহায্য করে।
আরো পড়ুনঃ
কিভাবে পেটের চর্বি কমানো যায়
ওজন নিয়ন্ত্রণ: গর্ভাবস্থার পর ওজন নিয়ন্ত্রণের জন্য সুষম খাদ্য গ্রহণ এবং ব্যায়াম করা করা উচিত। অতিরিক্ত ওজন কমালে কোমরের উপরে চাপ কমে।
চিকিৎসা পরামর্শ
ডাক্তার দেখানো: যদি ব্যথা দীর্ঘস্থায়ী হয় এবং কোন প্রতিকার কাজ না করে তবে দ্রুত একজন অর্থপেডিক বা ফিজিওথেরাপিস্ট এর পরামর্শ নেওয়া উচিত।
ব্যথা নিবারক ওষুধ: ডাক্তার প্রেসক্রিপশন অনুযায়ী ব্যথা নিবারক ওষুধ খাওয়া যেতে পারে তবে এটি কখনোই নিজে থেকে শুরু করা উচিত নয়।
থেরাপি: ফিজিওয়েথেরাপি অ্যাকুপাংচার বা মেসেজ থেরাপি কোমরের ব্যথা কমাতে সহায়ক হতে পারে।
প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা
- গর্ভাবস্থার সময় থেকে ব্যায়াম সঠিক ভঙ্গি রক্ষা করুন ।
- সিজারের পরে হালকা কাজ দিয়ে শুরু করে ধীরে ধীরে শারীরিক কার্যক্রম বাড়ান।
- পুষ্টিকর খাদ্য গ্রহণ করুন যাতে আরও বেশি শক্তিশালী হয়।
- নিয়মিত মেডিকেল চেকআপ করার।
সিজারের পর কোমরের ব্যথা একটি সাধারণ সমস্যা হলেও এটি উপেক্ষা করা উচিত নয়। সঠিক পরিচর্যা এবং চিকিৎসার মাধ্যমে এই ব্যথা থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব। মায়েদের উচিত নিজের যত্ন নেওয়া এবং শরীরের সিগন্যালের প্রতি সচেতন থাকা ব্যথা বাড়লে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া সবচেয়ে ভালো।
সিজার করার মূল কারণ
সিজারের পর ঘাড় ব্যথা হলে করণীয় সিজার ডেলিভারি হলো একটি অস্ত্রোপচার প্রক্রিয়া। যা প্রাকৃতিক ভাবে ডেলিভারি সম্ভব না হলে শিশুর জন্ম দেওয়ার জন্য ব্যবহৃত হয়। সিজার করার পিছনে বিভিন্ন কারণ রয়েছে এগুলোকে সাধারণত দুই ভাগে ভাগ করা যায়। মায়ের কারণে এবং শিশুর কারণে নিচে সিজার ডেলিভারির মূল কারণগুলো বিস্তারিত আলোচনা করা হলো।
মায়ের শারীরিক জটিলতা
পেলভিস বা জরায়ুর গঠনগত সমস্যা, মায়ের পেলভিস জরায়ুর নিচের অংশ যদি সংকীর্ণ বা গঠন গতভাবে অসামঞ্জস্যপূর্ণ হয় তবে স্বাভাবিক প্রসব সম্ভব হয় না। গর্ভাবস্থায় উচ্চ রক্তচাপ প্রসাবে প্রোটিনের উপস্থিতি এবং শারীরিক ফুলে যাওয়ার সমস্যা দেখা দিতে পারে। এ ক্ষেত্রে দ্রুত সিজার প্রয়োজন হতে পারে ।
পূর্বে সিজার হওয়া যেসব মায়েদের পূর্বে সিজার হয়েছে তাদের ক্ষেত্রে আবার স্বাভাবিক ডেলিভারি ঝুঁকিপূর্ণ হতে পারে। যদি প্লাসেন্টা জরায়ুর নিচে অবস্থান করে প্লাসেন্টা জরায়ু থেকে আলাদা হয়ে যায় প্লাসেন্টাল অ্যাব্রাপশন তবে সিজার জরুরী হয়ে পড়ে।
প্রসব ব্যথা শুরু না হওয়া বা প্রসবের অগ্রগতি না হওয়া অনেক সময় প্রসব ব্যথা শুরু হলেও শিশু জরায়ু থেকে বের হতে পারে না এটি ফেল্ড লেবার। পেগ্র্রেস নামে পরিচিত। সংক্রমণ বা অন্যান্য স্বাস্থ্য সমস্যা যদি মায়ের শরীরে কোন গুরুতর সংক্রমণ থাকে। যেমন হার্পেস বা এইচআইভি তাহলে শিশুকে সুরক্ষিত রাখতে সিজার করা হয়।
শিশুর কারণে সিজার
শিশুর অবস্থানগত সমস্যা শিশু যদি উল্টো পথে ব্রিচ পজিশন বা পাশ ফিরে অবস্থান করে ট্রান্সভার্স তবে সিজার প্রয়োজন। শিশুর হৃদয স্পন্দনের সমস্যা গর্ভাবস্থায় বা প্রসবের সময় শিশুর হার্টবিট অনিয়মিত হলে জরুরী সিজার করা হয়।
জোড়া লাগানো বা জমজ শিশু জমজ বা একাধিক শিশুর ক্ষেত্রে প্রসব জটিল হতে পারে তাই সিজার করা হয়। বড় আকারের শিশু ম্যাক্রোসোমিয়া যদি শিশুর ওজন খুব বেশি হয় তাহলে স্বাভাবিক প্রসাবে জটিলতা দেখা দিতে পারে। নাভিরজ্জু সমস্যা শিশু নাভিরজ্জু যদি গলায় পেচিয় থাকে তবে জরায়ুর মধ্য দিয়ে সঠিকভাবে বের হতে না পারে তবে সিজার করা হয়।
জরুরী পরিস্থিতি
এমার্জেন্সি সিজার গর্ভাবস্থায় বা প্রসবকালীন হঠাৎ কোনো জটিলতা দেখা দিলে। যেমন রক্তপাত বা শিশুর অক্সিজেনের ঘাটতি তবে সিজার করতে হয়। দীর্ঘ প্রসবকালীন ব্যথা মায়ের প্রসবকাল দীর্ঘায়িত হলে যেমন ২৪ ঘন্টার বেশি সময় লেগে গেলে সিজার প্রয়োজন হতে পারে। মায়ের শারীরিক অক্ষমতা কিছু মায়েদের বয়স বেশি হলে বা অন্য কোন শারীরিক সমস্যা থাকলে স্বাভাবিক প্রসব সম্ভব হয় না।
সিজার ডেলিভারি মা এবং শিশুর জীবন রক্ষা করার জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রক্রিয়া। যদিও এটি একটি নিরাপদ পদ্ধতি তবে এটি একটি বড় অস্ত্রপচার এবং এর সঙ্গে কিছু ঝুঁকি জড়িত। তাই শুধুমাত্র প্রয়োজনীয় ক্ষেত্রে সিজার করা উচিত মা এবং শিশুর স্বাস্থ্য সুরক্ষার জন্য চিকিৎসকরা সর্বদা সঠিক সিদ্ধান্ত নিয়ে থাকে।
ডাক্তারগন কেন সিজার করতে বলে
সিজারের পর ঘাড় ব্যথা হলে করণীয় সিজার অপারেশন বা সিজার একটি সার্জিক্যাল প্রক্রিয়া। যার মাধ্যমে প্রসব করানো হয় এটি সাধারণত তখনই করানো হয় যখন প্রাকৃতিক ভাবে সন্তান প্রসব সম্ভব হয় না। মা এবং সন্তানের জীবনের জন্য ঝুঁকি থাকে তবে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে সিজার ডেলিভারির হার অনেক বেড়ে গেছে। এবং অনেক সময় রোগী বা তার পরিবার মনে করে ডাক্তাররা ইচ্ছাকৃতভাবে সিজার করার পরামর্শ দেন। এ বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো।
জরুরি অবস্থা ও চিকিৎসা গত কারণ
ডাক্তারগন সিজার করার পরামর্শ দেন বেশ কয়েকটি কারণের ভিত্তিতে যার মাধ্যমে গুরুত্বপূর্ণ কিছু হল।
যদি প্রসবের সময় মা অথবা শিশুর কোন শারীরিক জটিলতা দেখা যেমন বাচ্চার হার্টবিট কমে যাওয়া শিশুর ভুল অবস্থান ব্রিচ বা ট্রান্সফার পজিশন বা নাভিরোজ্য গলা পেঁচিয়ে ফেলা। এটি একটি মারাত্মক অবস্থা যেখানে মায়ের উচ্চ রক্তচাপ এবং অন্যান্য সমস্যা দেখা দেয়।
সুবিধা ও পরিকল্পিত প্রসব
পরিকল্পিত প্রসব অনেক সময় পরিবার বা মায়ের ইচ্ছার ভিত্তিতে নির্ধারিত দিন বা সময় প্রসবের জন্য সিজার বেছে নেওয়া হয়। সময় ও শারীরিক কষ্টের কমতি স্বাভাবিক প্রসবের তুলনায় সিজার কম কষ্টদায়ক যদিও এটি একটি মেজর অপারেশন।
বাণিজ্যিক কারণ কিছু ক্ষেত্রে অভিযোগ রয়েছে যে হাসপাতাল এবং ডাক্তাররা আর্থিক লাভের জন্য সিজার করার পরামর্শ দেন। সিজার অপারেশন স্বাভাবিক প্রসবের তুলনায় ব্যয়বহুল এবং এর ফলে হাসপাতালের আয় বৃদ্ধি পায়। তবে এটি নির্ভর করে হাসপাতাল এবং ডাক্তারের উপর এবং সব ক্ষেত্রে এটি সত্য নয়।
ডাক্তারদের সতর্কতা
মা ও শিশুর সুরক্ষা চিকিৎসকের প্রধান দায়িত্ব মা ও শিশুর জীবন রক্ষা করা জটিলতার ঝুঁকি থাকলে তারা সাধারণত সিজার অপারেশনকেই নিরাপদ মনে করে। আইনি ঝুকিঁ স্বাভাবিক প্রসবের সময় জটিলতা হলে রোগীর পরিবার অনেক সময় ডাক্তারকে দায়ী করে। এ ধরনের সমস্যা এড়াতে অনেক ডাক্তার সিজার করার সিদ্ধান্ত নিন।
অজ্ঞতা ও সামাজিক চাপ অনেক সময় রোগী ও তার পরিবার প্রসব প্রক্রিয়া সম্পর্কে সঠিক ধারণা রাখে না। তারা শারীরিক কষ্ট এড়ানোর জন্য বা শিশুর নিরাপত্তার জন্য সিজার করতে সম্মত হন। এছাড়া সমাজে অনেক ক্ষেত্রে মনে করা হয় সিজার প্রসব উন্নত পদ্ধতি।
সিজার অপারেশন এর ঝুঁকি যদিও সিজার একটি সাধারণ পদ্ধতি হয়ে উঠেছে এর ঝুঁকি গুলো বিবেচনায় নেওয়া উচিত।
বড় ধরনের অপারেশনের কারণে রক্ত ক্ষরণ সংক্রমণ এবং মায়ের দেহে দীর্ঘমেয়াদি প্রভাব পড়ে।পরবর্তী গর্ভধারণের জটিলতার সম্ভাবনা বেড়ে যাওয়া।
ডাক্তাররা সিজার করার পরামর্শ দেন। মূলত মায়ের এবং সন্তানের নিরাপত্তার কথা ভেবে। তবে এর সাথে আর্থিক সামাজিক ও আইনগত বিষয়গুলো জড়িত। রোগী এবং তার পরিবারের উচিত চিকিৎসকের সঙ্গে খোলামেলা আলোচনা করা। এবং শুধুমাত্র প্রয়োজন অনুযায়ী সিজার করানো পাশাপাশি সচেতনতা বৃদ্ধি এবং প্রসব প্রক্রিয়া সম্পর্কে সঠিক ধারণা রাখা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
সিজার করতে কত টাকা খরচ হয়
সিজারের পর ঘাড় ব্যথা হলে করণীয় সিজার ডেলিভারি খরচ বিভিন্ন দেশের হাসপাতালে ধরন চিকিৎসার মান এবং রোগীর জটিলতার উপর নির্ভর করে পরিবর্তিত হয়। নিচে সিজার ডেলিভারির খরচ সংশ্লিষ্ট বিষয়ের উপর ভিত্তি করে কিছু আলোচনা করা হলো।
সিজার ডেলিভারির খরচ এবং প্রাসঙ্গিক বিষয় সিজার ডেলিভারি যাকে সংক্ষেপে (সি সেকশন) বলা হয়।একটি সাধারণ এবং নিরাপদ প্রস্তুতি পদ্ধতি এটি সাধারণত তখনই করা হয় যখন স্বাভাবিক প্রসব ঝুকিঁ পূর্ণ হয়ে পড়ে। যদিও এটি একটি অত্যন্ত কার্যকর পদ্ধতি তবে এর খরচ এবং অন্যান্য বিষয় নিয়ে সচেতন হওয়া গুরুত্বপূর্ণ।
আরো পড়ুনঃ
আতা গাছের পাতার ১০ টি উপকারিতা
সিজার ডেলিভারির খরচের বিভিন্ন দিক সিজার ডেলিভারির খরচ মূলত নির্ভর করে কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ের উপর। হাসপাতালের ধরন সরকারি হাসপাতাল ও বেসরকারি হাসপাতালের মধ্যে খরচের ব্যবধান। সরকারি হাসপাতাল গুলোতে সাধারণত কম খরচে চিকিৎসা প্রদান করা হয় যেখানে বেসরকারি হাসপাতাল গুলোতে এই খরচ কয়েক গুণ বেশি হতে পারে।
অপারেশনের জটিলতা কোন রোগীর যদি আগে থেকে শারীরিক জটিলতা থাকে যেমন উচ্চ রক্তচাপ ডায়াবেটিস বা প্লসেন্টা সংক্রান্ত সমস্যা। তাহলে সিজার পদ্ধতি জটিল হতে পারে এতে অতিরিক্ত পরীক্ষা ওষুধ এবং চিকিৎসার প্রয়োজন হতে পারে যা খরচ বাড়ায়।
হাসপাতালের অবকাঠামো এবং সেবা। উন্নত মানের হাসপাতাল গুলোতে থাকা খাওয়ার সেবা আধুনিক সরঞ্জাম এবং বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের উপস্থিতির কারণে খরচ বেশি হতে পারে। অতিরিক্ত খরচ সিজার পদ্ধতির পর মা ও শিশুর জন্য প্রয়োজনীয় সেবা যেমন ইনকিউবেটর আইসিইউ ওষুধ এবং ফলোআপ চেকআপের খরচ যোগ হতে পারে।
বাংলাদেশে সিজার ডেলিভারির খরচ
বাংলাদেশে সিজার পদ্ধতির খরচের একটি সাধারণ চিত্র। সরকারি হাসপাতাল সরকারি হাসপাতালে সিজার ডেলিভারির খরচ সাধারণত ৫ থেকে ১০০০০ টাকার মধ্যে হয়ে থাকে তবে এটি অনেক সময় আরও কম হতে পারে কারণ সরকারি সেবা অনেকটাই ভর্তুকীর আওতায় থাকে।
বেসরকারি হাসপাতাল বেসরকারি হাসপাতাল বা ক্লিনিকের খরচ তুলনামূলকভাবে বেশি খরচ। সাধারণত ২৫ হাজার থেকে ত্রিশ হাজার টাকার মধ্যে হয়ে থাকে উন্নত মানের বেসরকারি হাসপাতাল যেমন অ্যাপোলো ইউনাইটেড বা স্কয়ার এই সব হাসপাতালে খরচ আরো বাড়তে পারে যা পঞ্চাশ হাজার টাকার বেশি হতে পারে।
গ্রাম অঞ্চল বনাম শহর শহরের তুলনায় গ্রাম অঞ্চলে সিজার ডেলিভারির খরচ কম তবে অনেক ক্ষেত্রেই গ্রামাঞ্চলে উন্নত চিকিৎসার সুবিধা সীমিত থাকে।
কেন সিজার খরচ পরিবর্তিত হয়
সিজার পদ্ধতির খরচ কেবল অপারেশনের জন্য নয় বরং রোগীর চিকিৎসার সামগ্রিক চাহিদার উপর নির্ভর করে এর মধ্যে অন্তর্ভুক্ত।
- অপারেশনের আগে প্রয়োজনীয় পরীক্ষা আলট্রাসনোগ্রাম রক্ত পরীক্ষা।
- অপারেশনের জন্য ব্যবহৃত ওষুধ এবং সরঞ্জাম।
- অপারেশনের পর মা ও শিশুর যত্নের খরচ।
- হাসপাতালে থাকার সময়কাল।
খরচ কমানোর উপায় সিজার পদ্ধতির খরচ কমানোর জন্য কিছু কিছু বিষয় বিবেচনা করা যেতে পারে।
সরকারি সুবিধা গ্রহণ সরকারি হাসপাতাল গুলোতে সিজার পদ্ধতির খরচ তুলনামূলক ভাবে কম সেখানে সেবা গ্রহণ করলে অর্থ সাশ্রয় হতে পারে। যদি স্বাস্থ্য বীমা থাকে তবে সিজার ডেলিভারির খরচ অনেকাংশে কমিয়ে আনা সম্ভব।
পরিকল্পিত চিকিৎসা গর্ব অবস্থার পর শুরু থেকেই সঠিক পরিকল্পনা এবং রেগুলার চেকআপ
করলে জটিলতায় এড়ানো সম্ভব যা খরচ কমাতে সাহায্য করে।
সিজার ডেলিভারির খরচ এর জন্য রোগীর এবং তার পরিবারের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। এটি একটি নিরাপদ এবং কার্যকর পদ্ধতি হলেও এর খরচ নিয়ে সঠিক তথ্য জানা দরকার। চিকিৎসা বেছে নেওয়ার সময় হাসপাতালের ধরন সেবার মান এবং খরচের বিষয়টি ভালোভাবে যাচাই করা উচিত। তাছাড়া সঠিকভাবে গর্ভাবস্থায় যত্ন নিলে সিজারের প্রয়োজনীয়তা কমানো সম্ভব যা নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করবে।
সিজার ভালো নাকি নরমাল ভালো
সিজার অপারেশন এবং নরমাল প্রসবের মধ্যে কোনটি ভাল তা নির্ভর করে পরিস্থিতি মা ও শিশুর স্বাস্থ্য। এবং চিকিৎসকের সুপারিশের উপর দুই ধরনের প্রসবেরই নিজস্ব সুবিধা ও ঝুঁকি রয়েছে নিচে বিষয়টি বিস্তারিতভবে আলোচনা।
নরমাল প্রসবের সুবিধা
প্রাকৃতিক প্রক্রিয়া নরমাল প্রসব হলো একটি স্বাভাবিক সারির বৃত্তীয় প্রক্রিয়া এতে কোন বড় সার্জারি বা কৃত্রিম হস্তক্ষেপের প্রয়োজন হয় না। জরায়ুর তাড়াতাড়ি পুনরুদ্ধার নরমাল প্রসবের পর জরায়ু দ্রুত সংকুচিত হয় এবং মায়ের শরীর স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসতে সাহায্য করে।
জটিলতার ঝুঁকি কম সাধারণত নরমাল প্রসবের সার্জারির ঝুঁকি বা ইনফেকশনের সম্ভাবনা কম থাকে। শিশুর জন্য উপকারী প্রসবের সময় শিশু যখন জন্মনালীর মাধ্যমে আসে তখন শিশুর ফুসফুসে জমে থাকা তরল বের হয়ে যায় এবং শিশুর শ্বাস-প্রশ্বাস নিতে সুবিধা হয়।।
মায়ের দ্রুত সুস্থতা নরমাল প্রসবের পর মায়েরা তুলনামূলক ভাবে দ্রুত সেরে ওঠেন এবং দৈনন্দিন কাজে ফিরে ফিরতে পারেন।
নরমাল প্রসবের সীমাবদ্ধতা
কষ্টকর অভিজ্ঞতা নরমাল প্রসব অনেক সময় মায়ের জন্য অত্যান্ত ব্যথা দায়ক এবং মানসিক চাপের কারণ হতে পারে। ঝুঁকি জটিলতা যেমন শিশুর নারীর পেচিয়ে যাওয়া বা প্রসবের দীর্ঘ সময় হলে শিশুর অক্সিজেনের অভাব হতে পারে।
অনিয়ন্ত্রিত পরিস্থিতি প্রসবের সময় জরুরী ভিত্তিতে সিজার করার প্রয়োজন হতে পারে যা মানসিক চাপে ফেলে।
সিজার প্রসবের সুবিধা
পরিকল্পিত প্রসব সিজার ডেলিভারির সাধারণত পূর্ব নির্ধারিত সময়ে করা হয়। মা ও পরিবারের জন্য প্রস্তুতির সুযোগ দেই। জটিলতা এড়ানো গর্ভাবস্থায় যদি প্লাসেন্টার অবস্থান শিশুর সঠিক মুভমেন্ট বা মায়ের শারীরিক সমস্যা থাকে সিজার একটি নিরাপদ বিকল্প।
মায়ের ব্যথা অভিজ্ঞতা কম নরমাল প্রসবের তুলনায় সিজার প্রসব অপেক্ষা কৃত কম ব্যথা দায়ক। কারণ এটি অ্যানেস্থেসিয়ার সাহায্য করা হয়। জরুরি অবস্থায় কার্যকর যখন নরমাল প্রসব সম্ভব নয় বা মায়ের বা শিশুর জন্য ঝুঁকিপূর্ণ সিজার একটি জীবন রক্ষাকারী পদ্ধতি হতে পারে।
সিজার প্রসবের সীমাবদ্ধতা
বড় সার্জারি এটি একটি বড় অপারেশন এবং এর ফলে ইনফেকশন রক্তক্ষরণ বা অন্যান্য
শারীরিক জটিলতার ঝুঁকি থাকে। দীর্ঘ পুনরুদ্ধার সময় সিজার প্রসবের পর মায়ের
স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসতে বেশি সময় লাগে। এবং দৈনন্দিন কাজে ফিরতে সমস্যা
হয়।
পরবর্তী গর্ভাবস্থা একাধিক সিজার করার কারণে ভবিষ্যতে গর্ভধারণ ও প্রসব জটিল হয়ে উঠতে পারে। অধিক খরচ সিজার ডেলিভারির খরচ সাধারণত নরমল খরচের তুলনায় অনেক বেশি হয়।
এটি নির্ভর করে মায়ের শারীরিক অবস্থা শিশুর পজিশন এবং গর্ভাবস্থার জটিলতার উপর চিকিৎসকেরা সাধারণত নরমাল প্রসবের সুপারিশ করেন। যদি কোন বড় জটিলতা না থাকে তবে সিজার প্রয়োজন হয়।
- গর্ভাবস্থায় জটিলতা থাকে যেমন উচ্চ রক্তচাপ ডায়াবেটিস বা প্লাসেন্টার।
- শিশুর অবস্থান উল্টো বা আড়াআড়ি হয়।
- জরুরী ভিত্তিতে প্রসব করতে হয়।
- নরমাল প্রসব ব্যর্থ হয়।
মানসিক প্রস্তুতি ও সচেতনতা প্রসব যেভাবেই হোক না কেন মা ও শিশুর সুস্থতায় প্রধান। নরমাল বা সিজার যে পদ্ধতিতে প্রসব হোক তার জন্য মানসিক ও শারীরিক ভাবে প্রস্তুত থাকা গুরুত্বপূর্ণ। পরিবারের সমর্থন এবং চিকিৎসকের পরামর্শ এই সময়ে খুবই প্রয়োজন।
নরমাল এবং সিজার প্রসব উভয়ের নিজস্ব সুবিধা ও সীমাবদ্ধতা রয়েছে তাই প্রসবের পদ্ধতি নির্ধারণের ক্ষেত্রে চিকিৎসকের পরামর্শ গ্রহণ করা সবচেয়ে জরুরী মা ও শিশুর সুস্থতা নিশ্চিত করায় মূল লক্ষ্য হওয়া উচিত।
সিজার একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রসব প্রক্রিয়া, যা সাধারণত তখনই করা হয়। যখন স্বাভাবিক প্রসব সম্ভব হয় না বা মা ও শিশুর স্বাস্থ্যের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ হয়।
একজন নারী কয়বার সিজার করতে পারবেন
সিজারের পর ঘাড় ব্যথা হলে করণীয় তবে একজন নারী কয়বার সিজার করতে পারবেন তা নির্ভর করে কিছু নির্দিষ্ট বিষয় এবং স্বাস্থ্যগত অবস্থার ওপর। নিচে এই বিষয়টি নিয়ে একটি বিশ্লেষণ দেওয়া হল।
সাধারণত চিকিৎসকরা সুপারিশ করেন একজন নারী যেন তিন থেকে চার বার সিজার করেন তবে এই সংখ্যা নির্ভর করে ব্যক্তিগত স্বাস্থ্য শরীরের প্রতিক্রিয়া এবং পূর্ববর্তী সিজারগুলোর প্রভাবের উপর বারবার সিজার করার ফলে জটিলতা বাড়তে পারে।
আরো পড়ুনঃ
রাতে ঘুমানোর আগে লবঙ্গ খেলে কি হয়
জরায়ু পেশির দুর্বলতা প্রতিবার সিজারের পর জরায়ুর পেশি এবং টিস্যুগুলোতে আঘাত লাগে যা পুনরায় সিজারের ক্ষেত্রে ঝুঁকিপূর্ণ বাড়ে। আঠালো টিস্যুর গঠন বারবার সিজারের ফলে পেটের ভিতর টিস্যুর আঠালো হয়ে যাওয়ার প্রবণতা থাকে যা পরবর্তী অপারেশন জটিল করে তোলে।
জরায়ু ফেটে যাওয়ার ঝুঁকি একাধিক সিজারের পর জরায়ু ফেটে যাওয়ার ঝুঁকি বেড়ে যায় যা মা ও শিশুর জন্য বিপদজনক।
চিকিৎসকের মতামত বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এবং বিভিন্ন চিকিৎসা সংস্থা পরামর্শ দেন যে সিজার তখনই করা উচিত। মা ও শিশুর যে জীবনের জন্য জরুরি হয়ে পড়ে প্রাকৃতিক প্রসব যদি সম্ভব হয় তবে সেটি সবচেয়ে ভালো পদ্ধতি। তবে যেসব নারীর জরায়ুতে সমস্যা থাকে বা আগে সিজার হয়েছে তাদের ক্ষেত্রে পুনরায় সিজার করা প্রয়োজন হতে পারে।
সিজারের পর ঘাড় ব্যথা হলে করণীয় কি
সিজারের পর ঘাড় ব্যথা হওয়া সাধারণ একটি সমস্যা যা মূলত শারীরিক অবস্থার পরিবর্তন। অস্ত্রপচারের পর ক্লান্তি বা অস্বাভাবিক ভঙ্গিমার কারণে হতে পারে। এ সমস্যার সমাধানে কয়েকটি কার্যকর উপায় অনুসরণ করা যেতে পারে।
ঘাড় ব্যথার সম্ভাব্য কারণ অস্বাভাবিক ভঙ্গি সিজার অপারেশনের পর মায়ের শরীর কিছুটা দুর্বল থাকে। ফলে শিশুকে বুকের দুধ খাওয়ানোর সময় অস্বাভাবিক ভঙ্গি বা অতিরিক্ত ঝুকেঁ থাকা। ঘাড়ের চাপ সৃষ্টি করতে পারে।
স্ট্রেস এবং ক্লান্তি শিশুর যত্ন নেওয়ার দায়িত্ব এবং ঘুমের অভাব থেকে ঘাড়ের পেশি শক্ত হয়ে যায়। অ্যানাস্থেসিয়ার প্রভাব সিজার অপারেশনের সময় দেওয়া ইস্পাইনাল বা এপিডুরাল অ্যানাস্থেসিয়ার কখনো কখনো ঘাড় বা পিঠের পেশির উপর প্রভাব ফেলে।
সিজারের পর ঘাড় ব্যথা হলে করণীয় পেশির দুর্বলতা সিজারের পর দীর্ঘ সময় শুয়ে থাকা বা ব্যায়ামের অভাব পেশিকে দুর্বল করে যা ব্যথার কারণ হতে পারে। সিজারের পর ঘাড় ব্যথা হলে উদ্বিগ্ন না হয়ে উপরে উল্লেখিত পদ্ধতিগুলি অনুসরণ করুন। প্রয়োজন বোধে চিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শ করুন এবং নিজেকে সুস্থ রাখার জন্য নিয়মিত সঠিক অভ্যাস গড়ে তুলুন।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url