হ্যামেলিনের বাঁশিওয়ালা গল্প না সত্যি

হ্যামেলিনের বাঁশিওয়ালা গল্প না সত্যি তা নিয়ে বহু তর্ক বিতর্ক রয়েছে। এটি কি শুধুই একটি লেখকের কথা নাকি সত্যিই এমন কিছু ঘটেছিল। এই প্রবন্ধে আমরা সেই প্রশ্নের উত্তর খোঁজার চেষ্টা করব। 

গল্পের সংক্ষিপ্ত বিবরণ হ্যামলিনের বাঁশিওয়ালার গল্পের উৎপত্তি জার্মানির মধ্যযুগীয় শহরে হ্যামলিনে।  কাহিনীটি অনুসারে ১২৮৪ সালে শহরটিতে ইঁদুরের উপদ্রবে জর্জরিত হয়েছিল। একদিন এক রহস্যময় বাঁশিওয়ালা শহরে এসে ঘোষণা করলেন যে তিনি সুরের জাদুতে ইঁদুরদের দূর করতে পারবেন শর্ত ছিল কাজের বিনিময়ে শহরের মানুষ তাকে একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ পারিশ্রমিক দেবে। 

পেজসূচিপত্রঃ হ্যামেলিনের বাঁশিওয়ালা গল্প না সত্যি .

হ্যামেলিনের বাঁশিওয়ালা গল্প না সত্যিবাঁশিওয়ালা তার বাঁশির মোহনীয় সুর বাজিয়ে ইঁদুরদের সমোহিত করেন এবং তাদের ওয়েসার নদীতে নিয়ে গিয়ে ডুবিয়ে ফেলেন। কিন্তু কাজ শেষ হওয়ার পর শহরের লোকেরা তাকে প্রতিশ্রুত পারিশ্রমিক দিতে অস্বীকার করে। প্রতিশোধ নিতে বাঁশিওয়ালা আবার বাঁশি বাজান তবে এবার ইঁদুরের বদলে শহরের সমস্ত শিশু বাচ্চারা তার সুরের মায়ায় আবিষ্ট হয়ে তার পিছু নেই এবং অজানা উদ্দেশ্যে হারিয়ে যায়। 

গল্পের ঐতিহাসিক ভিত্তি

হ্যামেলিনের বাঁশিওয়ালা গল্প না সত্যি প্রথমত হ্যামিলিন শহরের প্রাচীন রেকর্ড এবং ঐতিহাসিক দলিল পত্র পর্যালোচনা করলে দেখা যায় যে সত্যি ১৩০০ দশকের দিকে এক রহস্যজনক ঘটনা ঘটেছিল। যেখানে শহরের বহু শিশু নিখোঁজ হয়েছিল তবে এটি ইঁদুরের উপদ্রবের সঙ্গে যুক্ত ছিল কি না তা স্পষ্ট নয়।

হ্যামেলিনের বাঁশিওয়ালা গল্প না সত্যি ১৪০০ শতকের রেকর্ড হ্যামলিনের শহরের প্রাচীনতম রেকর্ডে ১৩৮৪ সালে লেখা উল্লেখ আছে ১২৮৪ সালের ২৬ শে জুন সেন্ট জন এবং সেন্ট পলের দিনে ১৩০ টি শিশু হারিয়ে গিয়েছিল। 

শহরের প্রাচীন গির্জার জানালা হ্যামলিনের একটি গির্জার জানালায় একসময় এই ঘটনার চিত্রাঙ্কন ছিল। এতে বাঁশিওয়ালার একটি চিত্র এবং শিশুদের হারিয়ে যাওয়ার কাহিনী আঁকা ছিল। 

হ্যামেলিনের বাঁশিওয়ালা গল্প না সত্যি ইঁদুরের উল্লেখ পরবর্তী সংযোজন গবেষকদের মতে মূল কাহিনীতে ইঁদুরের কথা ছিল না এটি ১৫০০ শতকের দিকে যুক্ত হয়েছিল। 

সম্ভাব্য ব্যাখ্য গল্পটি সম্পূর্ণ কাল্পনিক নয় বরং এটি কোন ঐতিহাসিক ঘটনার উপর ভিত্তি করে থাকতে পারে গবেষকরা কয়েকটি সম্ভাব্য ব্যাখ্যা দিয়েছেন।

আরো পড়ুনঃ সিজারের পর ঘাড় ব্যথা হলে করণীয়

হ্যামেলিনের বাঁশিওয়ালা গল্প না সত্যি ধর্মীয় করুসেড বা কলোনাইজেশন একটি তত্ত্ব অনুসারে শিশুদের হারিয়ে যাওয়া আসলে একটি ধর্মীয় করুন সেটের অংশ হতে পারে। মধ্যযুগে ইউরোপের বিভিন্ন অঞ্চলে শিশুদের ধর্ম যুদ্ধে পাঠানোর ঘটনা ঘটেছিল তাদের অনেকেই ইতিমধ্যে মারা যায় বা দাসত্বে বিক্রি হয়। 

প্লেগ বা মহামারীর শিকার আরেকটি তথ্য বলছে কোন মারাত্মক রোগ বা প্লেগের কারণে শিশুদের মৃত্যু হতে পারে শহরের লোকেরা কাহিনীটিক অলৌকিক রূপ দিয়েছে। 

হ্যামেলিনের বাঁশিওয়ালা গল্প না সত্যি কৃর্ষি সংকট ও অভিবাসন মধ্যযুগের ইউরোপের অনেক গ্রামে অর্থনৈতিক সংকটের কারণ ধ্বংস হয়ে গিয়েছিল। অভিভাবকরা সন্তানদের কাজের জন্য অন্য অঞ্চলে পাঠাতে বাধ্য হতেন।

সাংস্কৃতিক প্রভাব হ্যামলিনের বাঁশিওয়ালার গল্প বিভিন্ন সাহিত্যে ও সংস্কৃতিতে গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলেছে। ব্রাদার্স গ্রিম এ গল্পটি সংকলন করেছিলেন। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের লেখায়ও এর প্রভাব দেখা যায়। এটি কবিতা নাটক ও চলচ্চিত্রে বহুবার রূপান্তরিত হয়েছে।

হ্যামেলিনের বাঁশিওয়ালা গল্প না সত্যি হ্যামিলিনের বাশিওয়ালার কাহিনী শুধু একটি রূপকথা নয় বরং এটি বাস্তব কোন ঘটনার প্রতিফলন হতে পারে। যদিও এখনো পুরোপুরি নিশ্চিত হওয়া যায়নি তবে এটি আমাদের ইতিহাস সংস্কৃতি এর এবং মানব চরিত্র সম্পর্কে মূল্যবান শিক্ষা দেই।


এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url