আপেল এ কি ভিটামিন আছে জানলে অবাক হবেন

আপেল এ কি ভিটামিন আছে জানলে অবাক হবেন আপেল একটি পুষ্টিকর ফল যা বিভিন্ন ধরনের ভিটামিন ও খনিজ উপাদানে সমৃদ্ধ। সুস্বাদু এবং স্বাস্থ্যকর খাবার হিসেবে পরিচিত যা শরীরের জন্য প্রয়োজনীয় পুষ্টি সরবরাহ করে। আপেল মূলত ভিটামিন এ বি কমপ্লেক্স সি ই এবং কে পাওয়া যায় যা শরীরের বিভিন্ন কার্যক্রমের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।  

আপেল খেলে শরীরের জন্য প্রয়োজনীয় ভিটামিন পাওয়া যায় যা বিভিন্ন উপায়ে স্বাস্থ্যের উন্নতি করে এটি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় হজমের সমস্যা দূর করে ত্বক উজ্জ্বল রাখে এবং হাড় সুস্থ রাখে তাই প্রতিদিন একটি আপেল খাওয়া স্বাস্থ্যের জন্য খুবই উপকারী। বিস্তারিত জানতে শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত পড়ুন।

পেজসূচিপত্র: আপেল এ কি ভিটামিন আছে জানলে অবাক হবেন .

আপেলে কি কি ভিটামিন আছে

ভিটামিন এ আপেলে কিছু পরিমাণ ভিটামিন এ থাকে যা দৃষ্টি শক্তি উন্নত করতে সহায়তা করে। এটি চোখের স্বাস্থ্য ভালো রাখে বিশেষ করে রাতকানা রোগ প্রতিরোধ করে। এছাড়া ভিটামিন এ ত্বকের সুস্থতা বজায় রাখতে ও রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা শক্তিশালী করতে সাহায্য করে। 

ভিটামিন বি কমপ্লেক্স আপেলে বিভিন্ন ধরনের ভিটামিন বি রয়েছে যেমন 
  • থায়ামিন বি১ এটি কার্বোহাইড্রেট থেকে শক্তি উৎপাদনে সহায়তা করে এবং স্নায়ুতন্ত্রের সুস্থতা বজায় রাখে। 
  • রিবোফ্লাভিন বি২ শরীরে শক্তি উৎপাদনে সাহায্য করে এবং কোষের বৃদ্ধি ও উন্নয়নে ভূমিকা রাখে। 
  • নায়াসিন বি৩ এটি হজম প্রক্রিয়া উন্নত করে এবং স্নায়ুতন্ত্রের ও ত্বকের স্বাস্থ্যের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। 
  • প্যান্টোথেনিক এসিড বি৫ শরীরের হরমোন উৎপাদন ও বিপাক ক্রিয়ার সাহায্য করে। 
  • পাইরিডক্সিন বি৬ স্নায়ুতন্ত্রের কার্যকারিতা বাড়াতে এবং রক্তে হিমোগ্লোবিন গঠনে সহায়তা করে। 
  • ফোলেট বি৯ রক্তে নতুন কোর্স গঠনে সাহায্য করে যা বিশেষ করে গর্ভবতী নারীদের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। 
ভিটামিন সি আপেলে ভিটামিন সি সমৃদ্ধ যা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় এবং ত্বক চুল ও হাড়ের জন্য উপকারী এটি ক্ষত সারাতে সাহায্য করে এবং শরীরে অ্যান্টি অক্সিডেন্ট হিসেবে কাজ করে যা কোষকে ক্ষতিকর হাত থেকে রক্ষা করে। 

আপেল এ কি ভিটামিন আছে জানলে অবাক হবেন ভিটামিন ই আপেলে ভিটামিন ই ও থাকে একটি শক্তিশালী অ্যান্টি অক্সিডেন্ট। এটি ত্বকের স্বাস্থ্য ভালো রাখে এবং কোর্সগুলোর সুরক্ষায় সহায়তা করে। 

ভিটামিন কে ভিটামিন কে রক্ত জমাট বাঁধতে সাহায্য করে এবং হাড়ের সুস্থতা বজায় রাখে এটি বিশেষ করে বয়স্কদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ কারণ এটি অস্টিওপোরোসিস প্রতিরোধে ভূমিকা রাখে। 

আপেল খাওয়ার উপকারিতা

আপেল পৃথিবীর সবচেয়ে জনপ্রিয় পুষ্টিকর ফল গুলোর মধ্যে একটি। এটি শুধু সুস্বাদু নয় বরং স্বাস্থ্য উপকারিতার দিক থেকেও অনন্য। আপেলে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার ভিটামিন খনিজ ও অ্যান্টি অক্সিডেন্ট রয়েছে যা আমাদের শরীরের জন্য অত্যন্ত উপকারী। প্রতিদিন একটি আপেল খেলে অনেক রোগ প্রতিরোধ করা সম্ভব। আপেল খাওয়ার গুরুত্বপূর্ণ উপকারিতা বিস্তারিতভাবে আলোচনা করা হলো।
 
 
হৃদরোগ প্রতিরোধে সহায়ক আপেল খাওয়ার অন্যতম প্রধান উপকারিতা হলো এটি হৃদরোগ প্রতিরোধে সহায়তা করে। আপেলে উপস্থিতি ফাইবার পলিফেনল এবং অ্যান্টি অক্সিডেন্ট রক্তচাপ কমাতে সাহায্য করে যা হৃদরোগের ঝূুকি হ্রাস করে। বিশেষ করে আপেলের মধ্যে থাকা দ্রবণীয় ফাইবার এল ডি এল খারাপ কোলেস্টেরল কমিয়ে হৃদযন্ত্রকে সুস্থ রাখে। 

হজম শক্তি বৃদ্ধি করে আপেলে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার রয়েছে যা হজম প্রক্রিয়া স্বাভাবিক রাখতে সাহায্য করে এটি কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে কার্যকর ভূমিকা রাখে। আপেলের মধ্যে থাকা প্রি বায়োটিক উপাদান উপকারী ব্যাকটেরিয়ার বৃদ্ধিতে সহায়ক যা অন্তরের স্বাস্থ্য ভালো রাখে।
 
ওজন কমাতে সহায়তা করে ওজন কমাতে চাইলে আপেল হতে পারে একটি দুর্দান্ত বিকল্প এতে ক্যালোরির পরিমাণ কম এবং ফাইবার বেশি যা দীর্ঘ সময় পেট ভরিয়ে রাখে এবং অপ্রয়োজনীয় খাবারের প্রতি আসক্তি কমায়। গবেষণায় দেখা গেছে যারা নিয়মিত আপেল খান তাদের ওজন দ্রুত নিয়ন্ত্রণে আছে।
 
ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখে আপেলে থাকা প্রাকৃতিক শর্করা রক্তের শর্করার স্তর নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে। এতে গ্লাইসেমিক ইনডেক্স কম থাকে ফলে এটি রক্তের শর্করার মাত্রা বাড়াই না। আপেলের মধ্যে থাকা পলিফেনল ইনসুলিন সংবেদনশীলতা বাড়িয়ে টাইপ ২ ডায়াবেটিস প্রতিরোধে কার্যকর ভূমিকা রাখে। 

মস্তিষ্কের কার্যকারিতা উন্নত করে আপেলে উপস্থিতি অ্যান্টি অক্সিডেন্ট মস্তিষ্কের কোর্সকে সুরক্ষিত রাখে এবং স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধিতে সাহায্য করে। এটি আলঝেইমার ও পারকিনসন্স রোগ প্রতিরোধে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে। গবেষণায় দেখা গেছে আপেলের মধ্যে থাকা কয়েরসেটিন নামক যোগ নিউরনের ক্ষতি কমিয়ে মস্তিষ্কে সুস্থ রাখতে সাহায্য করে। 

রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় আপেল প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি অন্যান্য এন্টিঅক্সিডেন্ট থাকে যা শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। এটি ভাইরাস ও ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণ প্রতিরোধে সাহায্য করে ফলে ঠান্ডা কাশি ও অন্যান্য সাধারণ অসুস্থতা কম হয়। 

ক্যান্সার প্রতিরোধে সাহায্য করে অ্যান্টি অক্সিডেন্ট ও ফাইটো কেমিক্যাল সমৃদ্ধ আপেল ক্যান্সার প্রতিরোধে কার্যকর। গবেষণায় দেখা গেছে আপেল ফুসফুস কোলন এবং স্তন ক্যান্সারের ঝুঁকি হ্রাস করতে পারে। বিশেষ করে আপেলের মধ্যে থাকা পলিফেনল ক্যান্সার কোষের বৃদ্ধি প্রতিরোধ করে। 

ত্বকের সৌন্দর্য বজায় রাখে আপেলে থাকা ভিটামিন সি এবং অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট ত্বকে উজ্জ্বল ও সুস্থ রাখতে সাহায্য করে। এটি ত্বকের বলিরেখা কমায় এবং বয়সের ছাপ দূর করে নিয়মিত আপেল খেলে ত্বক মসৃণ ও উজ্জ্বল হয়। 

হাড়কে শক্তিশালী করে আপেল এর মধ্যে থাকা ক্যালসিয়াম ম্যাগনেসিয়াম এবং ফসফরাস হাড়ের গঠন মজবুত করতে সাহায্য করে এটি অস্টিওপোরোসিসের যোগ কমায় এবং হাড়ের ক্ষয় প্রতিরোধে কার্যকর ভূমিকা রাখে। 

শ্বাস যন্ত্রের সমস্যা কমায় আপেলের মধ্যে থাকা অ্যান্টি অক্সিডেন্ট ফুসফুসের কার্যকারিতা উন্নত করে এবং হাঁপানি ও অন্যান্য শ্বাস যন্ত্রের সমস্যার ঝুঁকি হ্রাস করে। গবেষণায় দেখা গেছে যারা নিয়মিত আপেল খান তাদের ফুসফুস সুস্থ থাকে এবং শ্বাসকষ্ট জনিত সমস্যা কম হয়। 

আপেল একটি অত্যন্ত স্বাস্থ্যকর ফল যা শরীরের বিভিন্ন অংশের সুরক্ষা ও সুস্থতা নিশ্চিত করে। এটি নিয়মিত খাওয়ার মাধ্যমে হৃদরোগ ডায়াবেটিস ক্যান্সার সহ অনেক রোগ প্রতিরোধ করা সম্ভব। শক্তি বৃদ্ধি ওজন নিয়ন্ত্রণ এবং ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়াতে সাহায্য করে, তাই প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় অন্তত একটি আপেল রাখা ভালো যাতে শরীর সুস্থ ও শক্তিশালী থাকে। 

আপেল খাওয়ার নিয়ম

আপেল এ কি ভিটামিন আছে জানলে অবাক হবেন আপেল পৃথিবীর অন্যতম জনপ্রিয় ফল যা স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত উপকারী। ভিটামিন খনিজ ও অ্যান্টি অক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ এবং শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে। কিন্তু আপেল খাওয়ার কিছু নির্দিষ্ট নিয়ম আছে যা অনুসরণ করলে এর পুষ্টিগুণ আরো ভালোভাবে কাজে লাগে। আসুন জেনে নিই আপেল খাওয়ার সঠিক নিয়ম ও সময়। 

কখন আপেল খাওয়া উচিত

আপেল খাওয়ার আদর্শ সময় সকালে খালি পেটে বা সকালের খাবারের পর। সকালে আপেল খেলে শরীর সহজেই এর পুষ্টিগুণ গ্রহণ করতে পারে এবং হজম ভালো হয়।
 
  • সকালে খালি পেটে আপেলের প্রচুর ফাইবার থাকে যা পরিপাকতন্ত্র পরিষ্কার রাখতে সাহায্য করে।
  • খাবারের পর সকালের নাস্তার পর আপেল খেলে এটি হজম শক্তি বাড়ায়। 
  • রাতে খাওয়া উচিত নয় রাতে আপেল খেলে এর ফাইবার এবং প্রাকৃতিক চিনি হজম হতে বেশি সময় নেয় যা গ্যাস বা অম্বল সৃষ্টি করতে পারে। 
আপেল এ কি ভিটামিন আছে জানলে অবাক হবেন আপেল খাওয়ার সঠিক পদ্ধতি অনেকেই আপেল খাওয়ার ক্ষেত্রে কিছু ভুল করে থাকে যা এড়িয়ে চলা উচিত ।
  • ছুলে না খাওয়াই ভালো আপেলের খোসার মধ্যে প্রচুর ফাইবার ও অ্যান্টি অক্সিডেন্ট থাকে যা স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী তাই ভালোভাবে ধুয়ে খোসা সহ আপেল খাওয়া উচিত। 
  • চিবিয়ে ধীরে ধীরে খাওয়া ভালো এতে লালা, নীল সরল বাড়ে এবং হজম ভালো হয়।। 
  • কাটা আপেল দ্রুত খেয়ে ফেলুন আপেল কাটার পর এটি দ্রুত অক্সিডাইজ হয়ে যায় ফলে পুষ্টিগুন কমতে শুরু হয়। 
আপেলের সাথে কি খাবেন কি খাবেন না আপেলের সাথে কিছু খাবার খেলে এটি আরো স্বাস্থ্যকর হয় আবার কিছু খাবার এগিয়ে চলা ভালো। 
  • দুধের সাথে আপেল নই আপেলের মধ্যে থাকাই অ্যাসিড ও ফাইবার দুধের সাথে বিক্রিয়া করে হজমের সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে। 
  • বাদাম ও চীনা বাদামের সাথে খেতে পারেন এতে প্রোটিন ও ভালো ফ্যাট যোগ হয় যা দীর্ঘক্ষণ পেট ভরিয়ে রাখে।
  • মধুর সাথে আপেল ভালো এতে অ্যান্টি-অক্সিডেন্টের মাত্রা বাড়ে এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। 

প্রতিদিন কতটুকু আপেল খাওয়া উচিত

আপেল এ কি ভিটামিন আছে জানলে অবাক হবেন একজন প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের জন্য প্রতিদিন একটি মাঝারি আকারের আপেল প্রায় ১৫০-২০০ গ্রাম খাওয়া আদর্শ। অতিরিক্ত আপেল খেলে এতে থাকা ফরক্টোজ শরীরে চিনি বাড়াতে পারে, যা ডায়াবেটিস বা ওজন বৃদ্ধির ঝুঁকি তৈরি করতে পারে। 

আপেল সংরক্ষণ ও কেনার নিয়ম 

আপেলের পুষ্টিগুণ ঠিক রাখতে হলে এটি সঠিকভাবে সংরক্ষণ করা প্রয়োজন। 
  • ফ্রিজে রাখুন দীর্ঘদিন টাটকা রাখতে চাইলে আপেল ফ্রিজে সংরক্ষণ করুন। 
  • অর্গানিক আপেল কিনুন বাজারে আপেল গুলোর অনেক সময় মম বা রাসায়নিক প্রলেপ থাকে যা স্বাস্থ্যকর নয় তাই ভালো মানের বা অর্গানিক আপেল কেনার চেষ্টা করুন।
  • ব্যবহারের আগে ভালোভাবে ধুয়ে নিন রাসায়নিক দূর করতে আপেল লবণ বা বেকিং সোডা পানিতে ভিজিয়ে ধুয়ে নিতে পারেন। 
সঠিক নিয়ম মেনে আপেল খেলে এটি স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত উপকারী হতে পারে সকালে খাওয়াই সবচেয়ে ভালো। খোঁসা সহ খাওয়া উচিত এবং অতিরিক্ত খাওয়া ঠিক নয় স্বাস্থ্যকর জীবন যাপনের জন্য প্রতিদিন অন্তত একটি আপেল খাওয়ার অভ্যাস গড়ে তুলুন।

কোম্পানির তৈরি আপেল জুসের সম্ভাব্য ক্ষতি 

আপেল জুস সাধারণত স্বাস্থ্যকর পানীয় হিসেবে বিবেচিত হলেও কিছু নির্দিষ্ট কারণের জন্য এটি ক্ষতিকর হতে পারে। বিশেষ করে যখন এটি বাণিজ্যিকভাবে উৎপাদিত হয়। অনেক কোম্পানি আপেল জুস তৈরির সময় বিভিন্ন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে এমন উপাদন যোগ করে বা অপসারণ করে যা স্বাস্থ্যের জন্য ঝুঁকি সৃষ্টি করতে পারে। কোম্পানির তৈরি আপেল জুসের ক্ষতিকর দিকগুলো তুলে ধরা হলো।

আপেল এ কি ভিটামিন আছে জানলে অবাক হবেন অতিরিক্ত চিনি ও কৃত্রিম মিষ্টি বাণিজ্যিকভাবে তৈরি আপেল জুসে প্রাকৃতিক চিনির পাশাপাশি অতিরিক্ত চিনি বা কৃত্রিম মিষ্টি যোগ করা হয়। এতে ক্যালোরির পরিমাণ বৃদ্ধি পায় এবং নিয়মিত গ্রহণ করলে সুথলতা টাইপ ২ ডায়াবেটিস ও হৃদ রোগের ঝুঁকি বেড়ে যায়। 

প্রিজারভেটিভ ও কেমিক্যাল সংযোজন কোম্পানির আপেল জুস দীর্ঘদিন সংরক্ষণ করার জন্য বিভিন্ন প্রিজারভেটিভ যেমন সোডিয়াম বেনজয়েট এবং পটাশিয়াম সোরবেট ব্যবহার করা হয়। কিছু সংরক্ষণকারী রাসায়নিক মানবদেহে বিষক্রিয়ার কারণ হতে পারে। এবং লিভার ও কিডনির উপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে। 

ফাইবারের অভাব তাজা আপেলের তুলনায় আপেল জোসে ফাইবারের পরিমাণ অনেক কম থাকে। ফাইবার পরিপাকতন্ত্রের জন্য উপকারী এবং রক্তের শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। কিন্তু প্রক্রিয়াজাত আপেল জুসে ফাইবার না থাকায় এটি দ্রুত রক্তে শর্করার মাত্রা বাড়িয়ে দিতে পারে যা ডায়বেটিস রোগীদের জন্য ক্ষতিকর। 
 
 
অ্যাসিডিটি ও দাঁতের ক্ষতি আপেল জুসে স্বাভাবিক ভাবে উচ্চমাত্রার অ্যাসিডিটি থাকে যা দীর্ঘদিন ধরে নিয়মিত পান করলে দাঁতের এনামেল ক্ষয় করতে পারে। বিশেষ করে বাণিজ্যিক জুসে অ্যাসিডিটি বাড়ানোর জন্য অতিরিক্ত লেবুর এসিড যোগ করা হলে দাঁতের ক্ষয় দ্রুততর করতে পারে। 

কীটনাশক ও বিষাক্ত রাসায়নিকের উপস্থিতি বাজারে বিক্রি হওয়া আপেল জুসে ব্যবহৃত আপেল গুলোতে কীটনাশক এর অবশিষ্টাংশ থাকতে পারে। বেশ কিছু গবেষণায় দেখা গেছে আপেলের গাছে স্প্রে করা কীটনাশকের রাসায়নিক অংশ জুসে থেকে যেতে পারে যা দীর্ঘ মেয়াদে ক্যান্সারের ঝুঁকিবৃদ্ধি করতে পারে। 

কৃত্রিম স্বাদ ও রং অনেক কোম্পানি আপেল জুসের স্বাদ ও রং আকর্ষণীয় করতে ফ্লেভার এবং ফুড কালার ব্যবহার করে। কিছু ফুড কালার এবং ফ্লেভারিং এজেন্ট এলার্জির কারণ হতে পারে এবং শিশুদের মধ্যে আচরণগত পরিবর্তন আনতে পারে। 

উচ্চ ফরক্টোজ কর্ণ সিরাপ কিছু নিম্নমানের আপেল জুস কোম্পানি প্রাকৃতিক চিনির পরিবর্তে উচ্চ ফরক্টোজ কর্ণ সিরাপ ব্যবহার করে। এটি লিভারের ফ্যাট জমা বাড়িয়ে দিতে পারে এবং দীর্ঘ মিয়াদে হৃদরোগ ইনসুলিন প্রতিরোধ ও অ্যাসিডিটির কারণ হতে পারে। 

আপেল এ কি ভিটামিন আছে জানলে অবাক হবেন প্লাস্টিক বোতলের বিপদ অনেক কোম্পানি প্লাস্টিক বোতলে আপেল জুস বিক্রি করে যা বিপিএ এবং অন্যান্য ক্ষতিকর রাসায়নিক নির্গত করতে পারে। এসব রাসায়নিক হরমোনের ভারসাম্য নষ্ট করতে পারে এবং ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়াতে পারে।

অতিরিক্ত গ্রহণের ঝুঁকি আপেল জুস সাধারণত তরল অবস্থায় থাকায় সহজেই বেশি পরিমাণ গ্রহণ করা হয় যা অতিরিক্ত ক্যালোরি যোগ করে। তরল ক্যালোরি কঠিন খাবারের তুলনায় শরীরে সহজে বুঝতে পারে না ফলে ক্ষুধা কমায় না এবং বেশি খাওয়ার প্রবণতা বাড়ায়। 

শেষ কথা

আপেল এ কি ভিটামিন আছে জানলে অবাক হবেন যদিও আপেল জুস স্বাদে মিষ্টি ও জনপ্রিয় একটি পানীয় তবে কোম্পানির তৈরি প্রক্রিয়া জাত। আপেল জুস নিয়মিত গ্রহণ করলে এটি স্বাস্থ্যের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ হতে পারে। 

অতিরিক্ত চিনি কীটনাশক এর অবশিষ্টাংশ সংরক্ষণকারী রাসায়নিক এবং ফাইবারের অভাবে এটি ডায়াবেটিস সুথলতা হৃদরোগ এবং অন্যান্য স্বাস্থ্যগত সমস্যার কারণ হতে পারে। তাই বাজারে আপেল জুসের পরিবর্তে ঘরে তৈরি তাজা আপেল জুস বা সম্পূর্ণ আপেল খাওয়া স্বাস্থ্যকর বিকল্প হতে পারে। 

প্রিয় পাঠক আপেল জুস ভিটামিন আপেলের উপকারিতা আজকের আটিকেল। এই আর্টিকেলটি যদি আপনার ভালো লাগে আপনার আত্মীয়-স্বজনের সাথে শেয়ার করবেন। আজ এ পর্যন্তই দেখা হবে পরবর্তী আর্টিকেলে সে পর্যন্ত ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন কোন মতামত বা পরামর্শের জন্য কমেন্ট করতে পারেন আমরা দ্রুত রিপ্লাই দেওয়ার চেষ্টা করবো আল্লাহ হাফেজ।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url